বর্তমান সময়ে নিত্য নতুন স্মার্টফোন লঞ্চ হয়ে চলেছে। এবং তাতে থাকছে নানা রকম ফিচারস থাকতে সুপারফাস্ট চার্জিং ও ব্যাটারির ক্যাপাসিটিও ভালো থাকছে। কিন্তু একটা সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করতে করতে তার ব্যাটারি ব্যাকআপ কিন্তু আর নতুনের মত থাকে না।স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা চান যে তাদের ফোন লম্বা সময়ের জন্য ভালো সার্ভিস দিক, তার জন্য ফোনের ব্যাটারি ভালো থাকা প্রয়োজন । কিন্তু ১-২ বছর ফোন ব্যবহার করার পর ফোনের ব্যাটারি খারাপ হতে থাকে। এ থেকে কিভাবে বাঁচতে পারা যায়? কি এমন পদক্ষেপ নিলে ফোনের ব্যাটারি ভালো থেকে যায় জানবেন আজকের লেখাই।
১. সর্বদা ফোনের অরিজিনাল চার্জার ব্যবহার করা।
স্মার্টফোনের সঙ্গে পাওয়া চার্জার বা ফোন প্রস্তুতকারী যে চার্জার সমর্থন করে, তা ব্যবহার করা। দ্রুত চার্জ করার ক্ষেত্রেও এটি উপকারী। ফোনের সঙ্গে পাওয়া চার্জার ব্যাটারি টেকসই করে। তৃতীয় পক্ষের চার্জার বা নকল চার্জার ব্যবহার করা যাবে না। আবার কিছু কিছু ফোনে এখন চার্জার থাকছে না সেই ক্ষেত্রে আপনি সেই ব্র্যান্ডের কিন্তু চার্জার কিনে ব্যবহার করবেন অন্য কোন লোকাল ব্র্যান্ডের চার্জার ভুলেও ব্যবহার করবেন না এটি আপনার ফোনের ব্যাটারির অনেক ক্ষতি করে।
২. ফাস্ট চার্জার সাপোর্ট না করলে সেটি ব্যবহার না করা।
অনেক সময় এরকম দেখা গিয়েছে যে আপনার ফোনে ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে না কিন্তু আপনি ফাস্ট চার্জার কিনে নিচ্ছেন যাতে আপনার ফোনটি ফার্স্ট চার্জিং হয় এতে আপনার ফোনে ফাস্ট চার্জিং হবে না বরং আপনার ফোনের ব্যাটারির ক্ষতি হবে।
দ্রুত চার্জিং (চার্জ হওয়া) সাধারণ চার্জিংয়ের চেয়ে ব্যাটারিকে বেশি গরম করে। তাই ফোন সমর্থন না করলে দ্রুত চার্জ হয়, এমন চার্জার ব্যবহার না করা। দ্রুত চার্জের প্রয়োজনে পাওয়ার সেভিং ও এয়ারপ্লেন মোড অন করে নিতে পারেন।
৩. ব্যাটারির পুরো চার্জ শেষ না করা।
বেশিরভাগ সময় এরকম হয়ে থাকে আমরা ফোনের ব্যাটারি ০% চার্জ হয় তারপরে চার্জে লাগিয়ে থাকি কিন্তু এটি ফোনের ব্যাটারির ক্ষেত্রে খারাপ । সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে ফোনের ব্যাটারি ০% – ১০০% করলে সেটা বেশিদিন ভালো থাকে না তার চেয়ে আপনি যদি ফোনের ব্যাটারি ২০% চার্জ এ নেমে আসে তখন চার্জে দেন এবং ৮০% হওয়ার পরে চার্জ থেকে খুলেদেন, ১০০% না করে সে ক্ষেত্রে আপনার ফোনের ব্যাটারি ভালো থাকবে।ব্যাটারির পুরো চার্জ ক্ষয় করে চার্জে না দেওয়াই ভালো। চার্জ সম্পূর্ণ শেষ হলে ব্যাটারির ভেতরে রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়, যা ব্যাটারির জন্য খুবই খারাপ। সেরকম প্রয়োজন হলে আপনি মাসে দুই থেকে তিনবার পুরো ১০০% চার্জ করলেন, কিন্তু সর্বদা ০-১০০% করবেন না।
এটি আপনার ফোনের ব্যাটারির জন্য খারাপ
৪. পুরো রাত্রি ফোন চার্জে না লাগিয়ে রাখা।
আমাদের মধ্যে এরকম অনেক দেখা যায় যে আমরা রাত্রে ঘুমানোর সময় ফোনটিকে চার্জে লাগিয়ে দিয় এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে আবার চার্জ থেকে খুলে নি।যার ফলে অতিরিক্ত চার্জে ব্যাটারির ভেতরে তাপ উৎপন্ন হয়, যা তড়িৎবিশ্লেষ্য সংমিশ্রণকে পরিবর্তন করে ফেলে। কিছু ক্ষেত্রে ভেতরের গ্যাস বের হয়ে যায় এবং ব্যাটারি ফুলে যায়। তাই কখনোই ফোনকে সারা রাত্রি চার্জে রাখবেন না।
৫. বেশি চার্জ খাই এরকম অ্যাপস ব্যবহার না করা।
কিছু অ্যাপস আপনার ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে সব সময় চলতে থাকে। যার ফলে সেগুলো আপনার ব্যাটারি থেকে চার্জ টেনে নেয়। তাই অ্যাপগুলো ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে। আপনার ফোনে কোন অ্যাপসে কতটুকু চার্জ খাচ্ছে সেটি আপনি আপনার ফোনের সেটিং এ পেয়ে যাবেন। এছাড়াও প্লে স্টোর ছাড়া অন্য কোন জায়গা থেকে ইন্সটল করা থার্ড পার্টি অ্যাপস ব্যবহার করা থেকে বাঁচতে হবে ,কিছু কিছু থার্ড পার্টি অ্যাপস আপনার ফোনের ব্যাটারি তাড়াতাড়ি শেষ করে দেয়।
৬. চার্জে লাগিয়ে ফোন ব্যবহার না করা।
অনেক সময় এরকম দেখা যায় আমরা চার্জে বসিয়ে গেম খেলতে লাগি বা কোনো ভারি অ্যাপস ব্যবহার করতে থাকি।
চার্জে দিয়ে স্মার্টফোনে গেম খেলা ও ভারী অ্যাপ চালানো যাবে না। গেমস ও অ্যাপ ব্যাটারির শক্তি ক্ষয় করে, যা ফোনকে গরম করে। আবার চার্জিংয়ের কারণে তাপ তৈরি হয়। এ দুই তাপ একত্রে ব্যাটারি নষ্ট করে দিতে পারে। এমনকি ফোন ব্লাস্ট হয়ে যেতে পারে।
৮. বেশি গরম ও ঠান্ডা জায়গায় ফোন ব্যবহার না করা।
সূর্যের আলোর নিচে, হিটার বা ওভেনের কাছে ফোন রাখা যাবে না। ফোন গরম হলে চার্জ দ্রুত ফুরায়। একইভাবে দীর্ঘ সময় খুব ঠান্ডায় রাখা যাবে না। এতে ভেতরের তড়িৎবিশ্লেষ্য সংমিশ্রণকে শক্ত বা হিমায়িত করে ফেলে। ফোন কেন নরমাল এবং টেম্পারেচারের মধ্যে ব্যবহার করতে হবে ও চার্জে রাখতে হবে। যাতে আপনার ফোনটি খুব বেশি গরম খুব বেশি ঠান্ডা না হয়ে যায়।
৯. ফোনের ব্রাইটনেস লেভেল কম করে রাখা।
ফোনের ব্রাইটনেস লেভেল কম করে রাখতে হবে। অটো করে রাখা যাবে না। আর পারলে ডার্ক মোড অন করে রাখতে হবে। পর্দার উজ্জ্বলতা ব্যাটারির প্রচুর শক্তি ব্যয় করে। তাই স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় স্তরের উজ্জ্বলতা ঠিক করতে হবে।