স্মার্ট ফোন আমরা সকলেই ব্যবহার করি। আর স্মার্টফোন আছে মানে Whatsapp অবশ্যই ব্যবহার করি।বর্তমানে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে Whatsapp। চ্যাটিং থেকে শুরু করে অডিও কল ভিডিও কল সমস্ত কিছুর জন্য whatsapp অন্যতম ভরসা। দ্রুত গতি এবং সুবিধার কারণে দৈনন্দিন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে মানুষের প্রথম পছন্দ হয়ে উঠেছে এই জনপ্রিয় অ্যাপ। Whatsapp-এর দারুণ অন্যতম স্ট্যান্ড-আউট ফিচার হল end-to-end encryption। এই ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহারকারী যাঁর সঙ্গে চ্যাট করছেন, তাঁদের মধ্যে হওয়া কথোপকথন নিরাপদ থাকবে। শুধু তা-ই নয়, শেয়ার করা ছবি, ভিডিও থাকবে সুরক্ষিত। অন্য কেউ তা দেখতে পাবেন না। কিন্তু কিছু কিছু সময় আমাদের সামান্য ভুলের কারণে আমাদের Whatsapp হ্যাক হয়ে যেতে পারে। যার ফলে আমাদের পার্সোনাল চ্যাটিং ভিডিও অডিও এবং ফটো চলে যেতে পারে হ্যাকারদের কাছে। আজকের এই লেখাতে আপনাকে জানাবো কি কি কারণে whatsapp হ্যাক হয়ে যেতে পারে। আর তা থেকে বাঁচার উপায়।
যে সকল কারণে WhatsApp হ্যাক হয়
১.ওটিপি অথবা ভেরিফিকেশন কোড:
নতুন হোয়াটসঅ্যাপ ইনস্টল করে তাতে ফোন নাম্বার ভেরিফিকেশন করার সময় একটি হোয়াটসঅ্যাপ ভেরিফিকেশন কোড আসে নম্বরে ওই হোয়াটসঅ্যাপ ভেরিফিকেশন কোড বা ওটিপি কারও সঙ্গে শেয়ার করা চলবে না। এই কোড একবার অন্য কারও হাতে পড়ে গেলে কিন্তু হ্যাকিংয়ের মুখে পড়তে পারে Whatsapp। তাই সতর্ক থাকুন এ ব্যাপারে।
২.দুর্বল টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন পিন:
WhatsApp টু-স্টেপ ভেরিফিকেশনের অপশন দেয়। এই টু স্টেপ ভেরিফিকেশন সহজ-সরল পিন দিয়ে তৈরি করা যাবেনা।তাহলে Whatsapp অ্যাকাউন্ট দুর্বল হয়ে যায়। আর হ্যাকাররা এই সুযোগে হ্যাক করে নিতে পারে অ্যাকাউন্ট। তাই টুইস্টার ভেরিফিকেশনের সময় কঠিন পিন রাখুন এবং সেটি অবশ্যই যেন আপনার মনে থাকে।
৩.সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক:
আপনার হোয়াটসঅ্যাপে অজানা নাম্বার থেকে মেসেজ আসলে বা কোন লিংক আসলে বা ফোন নাম্বারে কোনমেসেজ বাল লিংক আসলে কখনোই ক্লিক করবেন না। এমনকি ই-মেলের মাধ্যমে অজ্ঞাতপরিচয় এবং সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক করলে ফিশিং হানার মুখে পড়তে পারে Whatsapp অ্যাকাউন্ট। আসলে এই ধরনের লিঙ্ক ব্যবহারকারীর ডিভাইসে ম্যালওয়্যার ইনস্টল করতে পারে।
৪.কোনও সাবধানতা ছাড়া পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার:
জনবহুল স্থানে অসুরক্ষিত ওয়াই-ফাই ব্যবহার করলেও বিপদ বাড়তে পারে। আসলে এই সময় কোনও ভিপিএন ব্যবহার না করলে হ্যাকারদের হাতে ব্যবহারকারীর সমস্ত ডেটা পড়ে যেতে পারে।
৫.অ্যাপ আপডেটে গাফিলতি:
Whatsapp সময়ে সময়ে আপডেট না করা হলে এর নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে। আসলে আপডেটের মধ্যে থাকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ত্রুটির জন্য প্যাচেস।
৬.অসুরক্ষিত স্থানে ফোন রাখা:
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড, পিন অথবা বায়োমেট্রিক লক ঠিক মতো সেট করা না হলে অসুরক্ষিত স্থানে ফোন রাখলে তা হ্যাকারদের হাতে পড়ে যেতে পারে। তাই কোন অচেনা জায়গায় ফোন রাখবেন না যদি রাখতেও হয় তাহলে অবশ্যই স্ট্রং পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখুন এবং সেটি যেন হারিয়ে না যায় সেটার ওপর লক্ষ রাখুন।
৭. পাবলিক কম্পিউটারে Whatsapp ওয়েব :
কখনোই পাবলিক কম্পিউটারে নিজের Whatsapp ওয়েব সেশন খোলা রাখবেন না। তাহলে হ্যাকাররা সহজেই আপনার whatsapp এর এক্সেস পেয়ে যাবে। এবং আপনার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাক করে ফেলবে।
৮.ছদ্ম স্ক্যামের ফাঁদে পা দেওয়া:
অনেক সময় হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ আসে যে আপনি এত টাকা জিতেছেন বা কোন স্ক্যামার ফেক হোয়াটসঅ্যাপ আইডি থেকে আপনার সঙ্গে মেসেজ করে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য জেনে নেওয়ার চেষ্টা করে। এই সকল জিনিসগুলো থেকে বাঁচতে হবে হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিং এর হাত থেকে বাঁচতে।
৯.আলাদা আলাদা প্ল্যাটফর্মে একই ধরনের পাসওয়ার্ডের ব্যবহার:
একাধিক অ্যাকাউন্টে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা একেবারেই উচিত নয়। এতে অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা ঝুঁকির মুখে পড়ে যায়।
এ সমস্ত জিনিসগুলোর উপর আপনি লক্ষ্য রাখলে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক হওয়া থেকে বাঁচবে।