আপনি আপনার ফোনটিকে ব্যবহার করছেন অনেক দিন ধরে, এবং এখন আপনি ভাবছেন যে ফোনটিকে বিক্রি করবেন ।ওই ফোনে যে কত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে, তা আপনার থেকে ভাল আর কেই বা জানে! ডিলিট করবেন ভাবছেন? আপনি যদি আপনার সব ডাটা ঠিকভাবে ডিলিট না করেন তাহলে যদি সেগুলো কোন খারাপ মানুষের হাতে পড়ে তাহলে সে তার ভুল ব্যবহার করে আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে। তাই জেনে নেওয়া যাক পুরনো ফোন বিক্রি করার আগে কি কি করে নেওয়া অবশ্যক।
১) কন্ট্যাক্টের ব্যাকআপ করে নিন:
আপনি অনেক দিন ধরে ফোন ব্যবহার করছেন ফোন আছে অনেক মানুষের নম্বর , তাহলে অতি অবশ্যই আপনার ফোনে থাকা সমস্ত কনক্যাক্ট নম্বর গুলোর একটা ব্যাকআপ করে রাখুন। জিমেল অ্যাকাউন্টে সমস্ত ফোন নম্বর সিঙ্ক করে নিন। ম্যানুয়ালি করতে চাইলে কন্ট্যাক্টস ডট গুগল ডট কম থেকেও করতে পারেন।আপেল ফোনের ক্ষেত্রেও আপনি আপনার সমস্ত কন্টাক্ট এর ব্যাকআপ নিন ফোন বিক্রি করার আগে।
২) মেসেজ ও কল রেকর্ডের ব্যাকআপও করে নিন:
শুধু কয়েকটা নম্বর ব্যাকআপ করে নিলে হবে না। সঙ্গে কল রেকর্ড ও মেসেজের ব্যাকআপও করে নিতে হবে, পাছে কখন কাজে লেগে যায়, কে বলতে পারে। মেসেজ ব্যাকআপ করার ক্ষেত্রে এসএমএস ব্যাকআপ অ্যান্ড রিস্টোর নামক একটি থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহার করুন। আবার গুগল ড্রাইভেও সব মেসেজের ব্যাকআপ নিতে পারেন। কল রেকর্ডের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতে পারেন গুগল ড্রাইভ।আর যদি আপনার মনে হয় ব্যাকআপের প্রয়োজন নেই তাহলে অবশ্যই ডিলিট করে দিন ফোন বিক্রি করার আগে।
৩) ছবি, ভিডিয়ো-সহ সব মিডিয়ার ব্যাকআপ:
ছবি, ভিডিয়ো-সহ আরও বিভিন্ন ডকুমেন্ট ও মিডিয়া ফাইলসের জন্য় ব্যবহার করতে পারেন যে কোনও একটি ক্লাউড ব্যাকআপ। সেই তালিকায় রয়েছে গুগল ফটোজ়, গুগল ড্রাইভ, মাইক্রোসফট-এর ওয়ানড্রাইভ, ড্রপবক্স বা যে কোনও বিশ্বস্ত ক্লাউড সার্ভিস আপনার খুব কাজে লাগতে পারে। পাশাপাশি ফিজিকালি চাইলে সেই সব মিডিয়া ফাইলস একটি এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভ বা এসএসডি-তে ট্রান্সফার করতে পারেন।
৪) সব অ্যাকাউন্ট থেকে লগ আউট করুন:
অন্যের হাতে আপনার পুরনো ফোনটি তুলে দেওয়ার আগে তো নিশ্চয়ই ফ্যাক্টরি রিসেট করবেন। আর একবার ফ্যাক্টরি রিসেট করলে আপনার ফোন থেকে সব মুছে যাবে। কিন্তু আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট থেকে লগ আউট হবে না। তাই তার জন্য ফ্যাক্টরি রিসেট করার আগে সমস্ত গুগল অ্যাকাউন্ট থেকে লগ আউট করে নিন। পাশাপাশি অন্যান্য আরও জরুরি অ্যাকাউন্ট থেকেও লগ আউট করুন।
৫) মাইক্রোএসডি ও সিম কার্ড কার্ড খুলে রাখুন:
ফোনটি বিক্রি করার আগে অতি অবশ্যই একবার দেখে নিন যে, ফোন কোনও মাইক্রোএসডি কার্ড ও সিম কার্ড আছে কি। যদি থাকে, তাহলে খুলে নিন। আর খুলে নেওয়ার আগে একবার দেখে নিন, সেই মাইক্রোএসডি কার্ডে যা ডেটা ছিল, সেগুলি নিরাপদে রয়েছে কি না।
৬)হোয়াটসঅ্যাপ ব্যাকআপ তৈরি করুন:
নতুন ফোনে আপনার সমস্ত হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফিরে পেতে, পুরনো ফোন থেকেই একটা ব্যাকআপ তৈরি করে নিন। তার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ সেটিংসে গিয়ে চ্যাট অপশনে ক্লিক করলেই চ্যাট ব্যাকআপ অপশন পেয়ে যাবেন। সেখান থেকেই ব্যাকআপ করুন। চাইলে মিডিয়া ফাইলস যোগ করতেও পারেন আবার নাও করতে পারেন। এবার আপনার নতুন ফোনে যেই হোয়াটসঅ্যাপ ইনস্টল করবেন, সেই চ্যাট ব্যাকআপ রিস্টোর করে নিতে পারবেন। তাহলেই আপনার পুরনো ফোনের সমস্ত চ্যাট নতুন ফোনে চলে আসবে।
৭) ফোন এনক্রিপ্টেড রয়েছে কি না, দেখে নিন:
ফ্যাক্টরি রিসেট করার আগে আপনার ফোনটি এনক্রিপ্টেড রয়েছে কি না, তা একবার যাচাই করে নিন। যদি না থাকে তাহলে আপনার ফোন সেটিংস থেকে ম্যানুয়ালি তা করে নিতে পারবেন। এনক্রিপশন করে রাখলে ফ্যাক্টরি রিসেটের পরে আপনার ফোনের গোপনীয় তথ্য কারও পক্ষে অ্যাকসেস করা সম্ভব হবে না। বর্তমান সময়ের বেশির ভাগ ফোনেই এনক্রিপ্টেড অপশন থাকে, যা আগের মডেলগুলিতে দেওয়া হত না।
৮) ফ্যাক্টরি রিসেট করুন:
এতদূর পর্যন্ত জরুরি যে সব কাজ আপনাকে করতে বলা হয়েছে, সেগুলি ঠিকঠাক ভাবে করার পরে আপনার ফোনে ফ্যাক্টরি রিসেট করে নিন। তার জন্য ফোনের সেটিংসে গিয়ে রিসেট অপশনটি সার্চ করুন এবং সেখানে গিয়ে ইরেজ় অল ডেটায় ক্লিক করুন। এটা করলেই আপনার ফোন থেকে সবকিছু মুছে যাবে। আর আপনি পুরোপুরি ভাবে সতর্ক হতে দুবার ফ্যাক্টরি রিসেট করুন। এরপর আপনি নিশ্চিন্তে আপনার পুরনো ফোনটিকে বিক্রি করে দিতে পারেন।
